অদৃশ্য তোমার নাভিমণ্ডলে আমার অনন্ত শোক
লিটন হোসাইন জিহাদ
এখন আর আমার অভিমান হয় না,
হয় না কোনো রক্তমাংসের বিষণ্নতা—
আমি শিখে গেছি, শূন্যতাও কখনো শূন্য থাকে না।
তোমার না-থাকার ভিতরেই এখন
আমি গড়ে তুলি এক অশরীরী উপস্থিতি—
যার নাম তুমি, যার রূপ অধরা, যার স্পর্শ অগ্নিমেঘে মোড়া।
তুমি নেই—এই বাক্যটি এখন
আমার ভেতর জন্ম দেয় নতুন কোনো মহাবিশ্ব।
তোমার নিঃসঙ্গ নাভিমণ্ডলে আজও ঘুরে বেড়ায়
আমার আকুল চাঁদ,
প্রেম সেখানে জোয়ার নয়,
প্রেম সেখানে হলো মহাকর্ষহীন রক্তক্ষরণ।
হৃদয় আমার আজ এক হিমায়িত রাজপ্রাসাদ,
যেখানে সিংহাসনে বসে আছে তোমার পুরাতন নাম—
ঝরছে মোমবাতির মতো,
কিন্তু নিভছে না কোনো আলো,
আলো নিভে গেলে যা থাকে, আমি এখন তাই।
রাগ হয় না আর,
কারণ আমি সমস্ত ক্রোধকে পুড়িয়ে দিয়েছি
তোমার চোখের একবারের অনাহুত নিষ্পলকতায়।
তুমি কি জানো,,
আমার কবিতাগুলো প্রতিরাতেই আত্মহত্যা করে এক অমিমাংসিত যন্ত্রণায়?
বোকা হৃদয়ে শুধু নয়,
এখন আমার হাড়ের ভেতর, অস্থিমজ্জায়,
তোমার এক ফিসফিসে দীর্ঘশ্বাস বাস করে—
যা ঘুম পাড়িয়ে দেয় সকল যুক্তিকে,
জাগিয়ে তোলে কেবল অন্ধকারকে
আর অন্ধকার থেকে জন্ম নেয়—
একটি রক্তাক্ত ফুল, যার নাম প্রেম।
তুমি এখন
একটি ভাষাহীন পাণ্ডুলিপি,
তোমাকে পড়তে গেলে চোখে লাগে আগুনের জল,
শব্দ ঝরে পড়ে…
প্রেম যেন ধ্বংসপ্রাপ্ত কোনো গ্রন্থাগার,
আর আমি এখনো সেই ভস্মের গন্ধে বাঁচি।
কোথাও কোনো অনুতাপ নেই—
তবু আমার প্রতিটি শ্বাসে বাজে বেদনার শঙ্খ,
যেন তুমি চলে যাওনি,
বরং আমি হারিয়ে ফেলেছি সেই বাস্তবতাকে
যেখানে মানুষ মানুষকে ছুঁতে পারে,
ভালোবাসা বলতে পারে—
“আমি এখনো আছি।”