আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: ইতিহাসে এটি তৃতীয়বার

লেখক: দেলোয়ার হোসাইন মাহদী
প্রকাশ: ১ মাস আগে
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: ইতিহাসে এটি তৃতীয়বার

ব্রাক্ষণবাড়িয়া প্রতিনিধি : বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ২০২৫ সালের ১০ মে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে দলটির সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে নতুন কিছু নয়। এর আগে আরও দুইবার দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
প্রথমবার, ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের পর সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেন। এর আওতায় পড়ে নিষিদ্ধ হয় আওয়ামী লীগও।

দ্বিতীয়বার, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ রাতে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান এক বেতার ভাষণে আওয়ামী লীগকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেওয়া সেই ভাষণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনেন এবং তাঁদের ‘পাকিস্তানের শত্রু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

ওই ভাষণে ইয়াহিয়া খান বলেন, “শেখ মুজিব ও তাঁর অনুসারীরা পাকিস্তানকে ভাঙতে চায়—এটি একটি অপরাধ, যার শাস্তি অনিবার্য।” একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা দেন, “সারা দেশে সর্বপ্রকার রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং আওয়ামী লীগকেও রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।”
ভাষণটিতে সেন্সর ব্যবস্থা জোরদার, সামরিক আইন জারি এবং সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করে দেশের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার নির্দেশও দেওয়া হয়। তিনি বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত থাকবে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ: ইতিহাসে এটি তৃতীয়বার

২০২৫ সালের নিষেধাজ্ঞাটি এমন এক সময় এলো, যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। যদিও এ বিষয়ে সরকারি পক্ষ থেকে বিস্তারিত কোনো বিবৃতি এখনও দেওয়া হয়নি, তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো সূত্র জানায়, অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা, জনমতের চাপ এবং রাজনৈতিক অচলাবস্থার জেরে সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়।

তবে বর্তমানে দলটির ভবিষ্যত রাজনৈতিক ভূমিকা এবং দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে এখন জোর আলোচনা চলছে।