ঈদে বাড়ি ফেরা হলো না নবীনগরের দুই নারীর, নদীতে ডুবে মৃত্যু

লেখক: মোঃমনির হোসেন
প্রকাশ: ১ মাস আগে

ব্রাক্ষণবাড়িয়া প্রতিনিধি, ঈদের আনন্দে প্রিয়জনের সঙ্গে বাড়ি ফেরা হলো না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের রসুল্লাবাদ গ্রামের দুই নারীর। ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) ভোররাতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ফেরি থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীতে পড়ে গেলে তারা নিখোঁজ হন। দীর্ঘ উদ্ধার তৎপরতার পর দুপুরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত দুই নারী হলেন রসুল্লাবাদ গ্রামের খালেদা বেগম (৪০) ও ফারজানা বেগম (১৯)। দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান খালেদা বেগমের ছেলে কামাল হোসেন (১৯) এবং ফারজানা বেগমের স্বামী সাগর হোসেন। বর্তমানে তারা আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা গেছে, ঈদ উদযাপন করতে পরিবারসহ ঢাকা থেকে নবীনগরের রসুল্লাবাদে ফিরছিলেন তারা। ভোর রাত ৩টা ২০ মিনিটে বিশনন্দী ফেরিঘাটে পৌঁছে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেরিতে ওঠেন। ফেরি ছাড়ার মাত্র দুই মিনিট পর অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা নদীতে পড়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফেরিটিতে কোনো রকম রেলিং বা নিরাপত্তা বেষ্টনী ছিল না। ফেরি কিছুটা কাত হয়ে পড়ায় ভারসাম্য হারিয়ে অটোরিকশাটি পানিতে ডুবে যায়।

দুর্ঘটনার খবর এলাকায় পৌঁছালে রসুল্লাবাদ গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। ঈদের আনন্দ মুহূর্তেই পরিণত হয় বিষাদে। পরিবারের সদস্যরা পাগলপ্রায় হয়ে নদীর পাড়ে অপেক্ষা করছিলেন প্রিয়জনদের খোঁজে।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাছির উদ্দিন দুপুরে জানান, ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এরপর মরদেহ দুটি থানার হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে, এ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন—কেন এত বড় একটি ফেরিঘাটে নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা? ফেরির রেলিং না থাকা, পর্যাপ্ত আলো না থাকা এবং কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবকে দায়ী করছেন তারা।

এত বড় দুর্ঘটনার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি, নিয়মিত তদারকি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত থাকলে এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।

নিহতদের পরিবার এবং এলাকাবাসী দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।