জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে বালু উত্তোলন, নদের গর্ভে ফসলি জমি

লেখক: জাকিরুল ইসলাম বাবু,
প্রকাশ: ৪ সপ্তাহ আগে
জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে বালু উত্তোলন, নদের গর্ভে ফসলি জমি

জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের পুরোনা ফেরিঘাট থেকে পিয়ারপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বুলগেট ডেজার বসিয়ে প্রতিনিয়ত বালু তোলা হচ্ছে। এতে নদের দুইপাড়ে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। গত এক সপ্তাহে শরিফপুর ইউনিয়নের বগালী গ্রামের প্রায় ১০ একর ফসলী জমি নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে।

এনিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের সাথে গ্রামবাসীর সংর্ঘষের ঘটনাও ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছেন, অবৈধ ভাবে বালু উত্তােলনকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে।  কৃষকরা জানিয়েছেন, বুলগেট দিয়ে বালু তোলার কারনে প্রতিদিন ফসলী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে। যে জমিতে টমেটো, করলা, পটল, ধান, ভূট্রা চাষ হতো বালু তোলার কারণে ফসলী জমি হারিয়ে যাচ্ছে। বালু তোলার প্রতিবাদ করায় মারধরের শিকার হচ্ছেন বলে জানান।

জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদে বালু উত্তোলন, নদের গর্ভে ফসলি জমি

বগালী গ্রামের ওমর ফারুক হাফিজুর বলেন, সরকার পরিবর্তনের পর নতুন করে বুলগেট দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। এতে করে ৫ ফসলী জমি নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। প্রায় ১০ বিঘা ফসলী জমি চলে গেছে। এখানে রসুণ, পেঁয়াজ, শাকসবজি এবং ধান চাষ হতো। এখন জমি হারিয়ে অনেক বেকার হয়ে পড়েছে। বালু উত্তোলনে বাঁধা দিলে গেলে বালুখেকো আরব আলী, লিখন, রাজিবসহ ৭ থেকে ৮ জন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার উপর হামলা করে। মারাত্বক আহত অবস্থায় আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। পরে সদর থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। পুলিশ বালু খেকোদের সাথে আপোস মীমাংসা করে দিতে চায়।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, বালুখেকোরা বুলগেট দিয়ে বালু তোলায় ৭০ থেকে ৮০ ফুট গভীরতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে নদের পাড় ভেঙ্গে ফসলী জমি বিলীন হচ্ছে।

কৃষকের স্ত্রী শুকরিয়া বেগম বলেন, আমরা জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি চুকানি নিয়ে সবজিসহ ধান আবাদ করে সন্তানদের লেখাপড়াসহ সংসার চালাই। এখন নদীতে জমি চলে যাচ্ছে। আমরা কিভাবে চলবো। তবে বালু উত্তোলনকারি শাহীন ইসলাম বলেন, যারা অভিযোগ করছে তারাই দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ জোর পূর্বক দখল করে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করেছে। আমরা প্রতিবাদ করলে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।

এবিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকি বলেন, ছনকান্দা থেকে নরুন্দি পিয়ারপুর পর্যন্ত প্রায় আড়াই একর ভূমি উপর বৈধ বালুমহল পরিচালিত হচ্ছে। এর বাইরে যদি কেউ অবৈধভাবে বালু তোলে আমরা তাৎক্ষনিক ভাবে আমাদের জেলা বালু মহাল কমিটি এবং জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং আনসার নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি। আমাদের কাছে সংবাদ আসা মাত্রই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি।