দীর্ঘদিন পর বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মাদ রুহুল আমিন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন।


পথিক রিপোর্ট:
বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মাদ রুহুল আমিন ও যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামের কথোপকথন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের এক বীর সিপাহীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ রুহুল আমিন আজ দুপুর ২ ঘটিকায় বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য ও জেলার সাবেক সফল সভাপতি যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার মসজিদ রোডস্থ আল-মক্কা স্টোরে একটি জরুরী কাজে গিয়ে ছিলেন। তিনি এর আগেও বহুবার তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ছিলেন। তবে আজকের যাওয়াটা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ছিল। অন্য সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মাদ রুহুল আমিন উনার জীবনের দুঃখদুর্দশার কথা যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সাথে বলতেন। আর আজ গিয়ে আনন্দের সংবাদ শুনালেন। তিনি বলেন গত কিছুদিন পূর্বে সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। ঐ তালিকায় আমিও তালিকা বদ্ধ হয়েছি। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো আমার কাছে স্বীকৃতির কাগজপত্র আসেনি। আশা করছি অচিরেই আমি সব কাগজপত্র পেয়ে যাব। তবে তাৎক্ষণিক তিনি কোন কাগজপত্র দেখাতে পারিনি।
তিনি বলেন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও দীর্ঘদিন আমি মুক্তিযোদ্ধার সুযোগসুবিধা পাইনি। যা অন্য মুক্তিযোদ্ধারা পেয়েছে। তার এ মুক্তিযোদ্ধার সুযোগসুবিধা না পাওয়ার পিছনে তাঁরই আপন ছোট ভাই সদর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবু হুরাইরা কে দ্বায়ী করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আবু হুরাইরা প্রতারণা করে মুক্তিযোদ্ধার সকল সুযোগসুবিধা ভুগ করে আসছিল। অথচ গত কিছুদিন পূর্বে সরকারের একটি প্রতিবেদনে প্রমাণিত হল এই আবু হুরাইরা মুক্তিযোদ্ধা নয়। সে ভুয়া ও অবৈধভাবে এতদিন মুক্তিযোদ্ধার সুযোগসুবিধা উপভোগ করেছে।
সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ হলে এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আবু হুরাইরা জনগণের রোষানলে পড়ে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী সমালোচিত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ রুহুল আমিন দীর্ঘদিন মুক্তিযোদ্ধার সকল সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকায় বহুদিন পরে আজ যখন বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম প্রকাশ হল, তখন তার আনন্দ-ই অন্যরকম মনে হয়েছে। এতদিন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা পথে পথে শিশুদের বই বিক্রি করে কোন রকম তার সংসার চালিয়েছে। তার পরনে তেমন কোন ভাল পোশাকও ছিলনা। আজ যখন উনি উনার প্রাপ্য সুসংবাদ পেয়ে আনন্দিত, তখন তার ছোট ভাই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আবু হুরাইরা মানুষের রোষানলে পড়ে নিরবে নিভৃতে সমাজের লোকচক্ষুর আড়ালে।
যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম যখন উনার সাথে ছবি তুলতে যায় তখন তিনি তার ছোট ভাই আবু হুরাইরা সম্পর্কে কিছু না লিখতে বারংবার নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নতুন করে প্রকাশ করায় আবু হুরাইরার নাম বাদ পড়েছে। জনগণ তাকে নিয়ে সমালোচনা করায় সে কষ্ট পেয়ে জনগণ থেকে আড়াল হয়ে আছে। অথচ এই আবু হুরাইরা-ই বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ রুহুল আমিন কে মুক্তিযোদ্ধার সুযোগসুবিধা থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত করে রেখেছিল। তার এ নিষেধাজ্ঞা শুনে যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মনে হয়েছে সমাজে এখনো সৎ ও মহৎ মানুষ বেচে আছে। আর এই মানুষ গুলো আছে বলেই সমাজ আজও এত সুন্দর। আল্লাহ তায়ালা এই ভাল মানুষ গুলোকে দীর্ঘজীবী করুক। আমিন
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল এই বীর মুক্তিযোদ্ধার পিতাও ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলাধীন অষ্ট্রগ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার দাদার নাম ছিল মাওলানা আবদুর রহমান। আর তার পিতার নাম হল বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মুহাম্মদ আবদুল আওয়াল। তিনি সংসারের বড় ছেলে হওয়ায় ১৯৭১ সালে তিনি তার বাবার সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।