বৈশ্বিক মন্দা নিয়ে দেশের মানুষকে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা । বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশের যেন খুব বেশি ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য দেশবাসীকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উৎপাদন বৃদ্ধি, সাশ্রয়ী ও মৃতব্যয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে এ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানান তিনি।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতাধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে দেশের ২৫টি জেলায় নবনির্মিত শত সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথি হিসেবে সরকারি বাসভবন (গণভবন) থেকে এ অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, সেতুগুলো নির্মাণ করে দিলাম। এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, সুন্দরভাবে ব্যবহার করা আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব। সেতুগুলো নির্মাণের ফলে প্রত্যেকটা অঞ্চলে আর্থসামাজিক উন্নতি ঘটবে। তবে করোনা ভাইরাস এবং ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে সেখানে আপনাদের সবাইকে একটু সতর্ক হতে হবে। সাশ্রয়ী হতে হবে এবং মৃতব্যয়ী হতে হবে।
নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। তেল-গ্যাস পানি বিদ্যুৎতের ব্যবহার সীমিত করতে হবে। আর আপনাদের প্রত্যেকটা এলাকায় যেখানে খালি জমি আছে সেখানে যত বেশি পারবেন খাদ্য উৎপাদন করবেন। ফল, তরি-তরকারি যেটাই পারেন উৎপাদন করবেন। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ভেড়া যা কিছু পান সেগুলো পালন করতে হবে অর্থাৎ নিজেদের উপার্জন নিজেদের করার চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, পৃথিবী একটা গ্লোবাল ভিলেজ, তাই সারাবিশ্বে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সে অভিঘাতটা বাংলাদেশেও আসে। সব জায়গায় দাম বেড়ে যাওয়াতে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের খুবই সাশ্রয়ী হতে হবে। কোনো অপচয় করা যাবে না। আন্তর্জাতিকভাবে আজকে যে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিচ্ছে, সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেই সমস্যা থেকে বাংলাদেশের মানুষ যেন মুক্ত থাকে সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। প্রত্যেকটি পরিবার তাদের নিজেদের জন্য সেই চেষ্টা করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আছি আপনাদের পাশে, সারা বাংলাদেশের উন্নয়নটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ ঘোষণা দিয়েছি, এ ৪১ এ আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। বাংলাদেশের কোনো মানুষ ভূমিহীন বা গৃহহীন থাকবে না, সেই নীতিতে আমরা অটল রয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকা এ ১৪ বছরে বিভিন্ন মহাসড়কে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৩ মিটার সেতু পুনঃনির্মাণ ও ২১ হাজার ২৬৭ মিটার কালভার্ট করেছি। মহাসড়কগুলো আরও উন্নত করে দিচ্ছি যাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়।
আজকের শত সেতু খুবই আশ্চর্য বিষয়, একই সঙ্গে শত সেতু নির্মাণ করা এবং সেগুলোর উদ্বোধন করা সম্ভব হয়েছে কারণ আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সমগ্র বাংলাদেশে আমরা শতভাগ সফল হয়েছি, আমি যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
এটা একটা আনন্দের বিষয়ও। কারণ একসঙ্গে শত সেতু উদ্বোধন ঐতিহাসিক ঘটনা। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং এ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবিএম আমিনুল্লা নূরী।
<p>সম্পাদক ও প্রকাশক: লিটন হোসাইন জিহাদ</p>
© PothikTV Media Center