
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
বিজয়নগরে ঘুষের টাকা নিয়ে চাকুরী দিতে ব্যার্থ হয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। চাকরি দিতে ব্যর্থ হলেও চাকুরী দেওয়ার নামে নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত দিতে তালবাহানার অভিযোগ উঠেছে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।ঘুষের টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগী এক ব্যাক্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করেছেন দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
গত ৩/৯/২০২৩ইং তারিখে আরিফ সিদ্দিকী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ এর কাছে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,একসময় দিন মজুরি করে চলা ভুক্তভোগী স্থানীয় চেয়ারম্যান এর সহায়তায় দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ ইন সাল পর্যন্ত পিওন পদে পার্টাইম ক্যাটাগরিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এর সাথে পরিচয় হয়। পরে সে স্থায়ী ভাবে নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকরি পাওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের শরণাপন্ন হন। তখন তিনি বুল্লা আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকরি দেয়ার আশ্বাসে তার নিকট থেকে দুই ধাপে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। পরে বুল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য একজন নিরাপত্তা প্রহরী আবশ্যক শিরোনামে একটি বিজ্ঞাপন প্রচার হলে শিক্ষা অফিসারের কথা মতে আবেদন করে ।এসময় আরিফ সিদ্দিকী সহ ৪ জন এই পদে আবেদন করেন। এসময় তাকে সিলেকশন করা হয়। তাকে নিয়োগের সময় তার আবেদনের প্রেক্ষিতে তার সকল কাগজপত্র ও তার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি অফিসে জমা নেওয়া হয়। তখন তার আইডি কার্ডের সাথে সকল কাগজের তথ্যগত ভূল থাকায় তার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন না করলে চাকরি দেওয়া যাবেনা বলে জানান। এসময় তাকে দ্রুত কাগজ পত্র সংশোধন করা না হলে চাকুরী দেওয়া যাবেনা বলে জানানো হয়।পরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে দ্রুত সংশোধন করিয়ে দেবার কথা বলে নির্বাচন অফিসারের নাম ভান্গিয়ে পরবর্তীতে আরো ৪০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন নিজ অফিস কক্ষে। পরে তার জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলামের সাথে ভুক্তভোগী যোগাযোগ করলে আবেদনের ভিক্তিতে করে দিচ্ছি বলে জানান ।
এ সময় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ রাখতে বলেন। এরই মধ্যে বুল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনে বিলম্ব হওয়ায় উক্ত পদে আরিফ সিদ্দিকীর নিয়োগের আওতায় আসতে পারেনি। আরিফ সিদ্দিকী নিয়োগ প্রাপ্ত না হওয়ার পর সে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি তার অধীনস্থ এসব কাজে সহায়তা কারী আড়িয়ল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিটন দেব ও সাতবর্গ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাসুক ভুইয়ার মাধ্যমে ভুক্তভোগী আরিফ সিদ্দিকীকে দুই ধাপে ৪৫ হাজার টাকা ফেরৎ দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৭৫ হাজার টাকা ফেরত নিয়ে এখন শুরু হয়েছে নানা রকম তালবাহানা। এ বিষয়ে ভূক্তভোগি আরিফ সিদ্দিকী পড়ছে এখন বেকায়দায়।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী আরিফ সিদ্দিকী গত ৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এর প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ প্রাপ্তি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,৷
অভিযোগের পর থেকে আড়িয়ল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক লিটন দেব তার ব্যবহৃত ফোন বন্ধ করে লোক সমাজের অন্তরালে চলে গেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আব্দুল জলিল বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কাছে একটি অভিযোগ আছে শুনছি। স্যার বিষয় টা দেখবেন আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি না
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান,আমি নিয়োগ দেওয়ার কেউনা এবং এ বিষয়ে কিছু জানিনা, আমি কোন লোকের কাছ থেকে টাকা নেয়নি। আমার নাম ভান্গিয়ে কেউ টাকা নিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, একটা অভিযোগ পেয়েছি, অধিক গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দৃষ্টন্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এম.চৌ:/পথিক নিউজ