
মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি :মজুরির বকেয়া পাওনা টাকা নিয়ে অসন্তোষের জেরে নিজের নিয়োগকৃত শ্রমিকের হাতে খুন হয়েছেন এক ঠিকাদার। শুক্রবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে পাওনা মজুরির টাকা নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল ঠিকাদারের। প্রতিদিনের মজুরির টাকা না পেয়ে অনেকটাই মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন তারা। টাকা না থাকায় খাবার-দাবারও ঠিকমতো হচ্ছিল না শ্রমিকদের। এনিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
শুক্রবার এনিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে ঝগড়া হয় ঠিকাদারের। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে ঠিকাদার সিরাজুল ইসলাম (২৮) অন্য শ্রমিকদের মজুরির টাকা দিলেও দেননি আবদুল মুমিন (২৩) ও জাহির মিয়া (২১)কে। এনিয়ে রাতে আবারো ঠিকাদারের সঙ্গে ঝগড়া হয় ওই দুই শ্রমিকের।
ঝগড়া থেকে হাতাহাতির একপর্যায়ে আব্দুল মুমিন ও জাহির মিয়া মিলে লোহার রড ও বঁটি-দা দিয়ে আঘাত করে সিরাজুল ইসলামকে। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তার রক্তাক্ত দেহ ওই ঘরের খাটের নিচে রেখে পালিয়ে যায়।
শনিবার দুপুরে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী গণমাধ্যমকর্মীদের মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে প্রেস বিফ্রিংয়ে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ঘটনা ও ৮ ঘণ্টার মধ্যে মূল আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রেস বিফিংয়ে জানানো হয় ১৫ই সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার দিকে তারা জানতে পারেন সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ছিকরাইল গ্রামের মাহিন আহমদ এর বসতবাড়িতে একটি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।
ঐ সংবাদের প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী অফিসার ফোর্সসহ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। মৃতদেহ উদ্ধার করেন ও এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তে জানতে পারেন সিরাজুল ইসলাম (২৮) জেলার রাজনগর উপজেলার মনসুর নগর ইউনিয়নের মালিকোনা গ্রামের বাসিন্দা চুনু মিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রির ঠিকাদার। গেল ১ বছর ধরে ছিকরাইল গ্রামের মাহিন আহমদ এর বাড়িতে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ করছেন। প্রায় দেড় মাস আগে নির্মাণ কাজের জন্য শ্রমিক আব্দুল মুমিন ও জাহির মিয়াসহ ৩-৪ জনকে কাজে লাগান।
এদিকে, খুন হওয়া সিরাজুল ইসলাম এর ছোট ভাই নুরুল ইসলাম (১৯) হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ রাজনগরের কামারচাক ইউনিয়নের শ্যামেরকোনায় (নোয়াগাঁও) অভিযান চালিয়ে ঘটনার অভিযুক্ত আব্দুল মুমিন ও জাহির মিয়াকে ঘটনার ৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেয়া তথ্যানুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা, লোহার রড, মোবাইল ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে ।
এম.চৌ:/পথিক নিউজ