রমজান মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য, সহমর্মিতা ও তাকওয়া অর্জনের মাস। কোরআনে আল্লাহ বলেন:
📖 “হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।”
📌 (সুরা আল-বাকারাহ: ১৮৩)
রমজান মাসে শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়, জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
📖 “যখন রমজান মাস শুরু হয়, তখন জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়।”
📌 (সহিহ বুখারি: ১৮৯৯, সহিহ মুসলিম: ১০৭৯)
রমজান কেবল রোজা রাখার মাস নয়, বরং এটি মানুষের আত্মিক উন্নতি সাধনের মাস। এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত, দান-সদকা ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য প্রচেষ্টা করা উচিত।
রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আল্লাহ তাআলা কোরআনে এর সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন:
📖 “নিশ্চয়ই আমি এটি (কোরআন) কদরের রাতে নাযিল করেছি। তুমি কি জানো, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হলো এক রাত, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাঈল) তাদের রবের নির্দেশে প্রত্যেক কাজে অবতীর্ণ হয়। এটি শান্তিময় রাত, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।”
📌 (সুরা আল-কদর: ১-৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
📖 “যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের প্রত্যাশায় লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।”
📌 (সহিহ বুখারি: ২০১৪, সহিহ মুসলিম: ৭৬০)
এই রাত আল্লাহর অশেষ রহমত লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ। তাই এই রাতে বেশি বেশি ইবাদত, দোয়া, তাসবিহ, কোরআন তিলাওয়াত ও ইস্তিগফার করা উচিত।
১. তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধি: রমজান মুসলমানদের ধৈর্যশীল ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। এই মাসের শিক্ষা আমাদের সারা জীবনে কাজে লাগানো উচিত।
২. ইবাদতের প্রতি আগ্রহ: লাইলাতুল কদর আমাদের শিক্ষা দেয় যে, ইবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম এবং এটি ভাগ্য পরিবর্তনের এক মোক্ষম সময়।
3. দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা: এই রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত, কারণ এটি এমন এক রাত যেখানে গুনাহ মাফ করা হয়।
4. গরিব-দুঃখীদের সহায়তা: রমজান আমাদের অন্যের প্রতি সহমর্মিতা ও দানশীলতার শিক্ষা দেয়।
5. পরিবার ও সমাজকে ইসলামের পথে পরিচালিত করা: রমজানের শিক্ষা যেন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে যায়।
রমজান মাস আত্মশুদ্ধির মাস, আর লাইলাতুল কদর হলো রহমত ও মাগফিরাত লাভের শ্রেষ্ঠ সুযোগ। কোরআন ও হাদিসে এই মাসের গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। তাই আমাদের উচিত, এই মাসের শিক্ষা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করা এবং লাইলাতুল কদরের মতো মহিমান্বিত রাতে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য আন্তরিক ইবাদতে মগ্ন হওয়া।
📢 আসুন, আমরা এই রাতের যথাযথ মূল্যায়ন করি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে নিজেদের আত্মনিয়োগ করি।
🔹 আল্লাহ আমাদের সবাইকে লাইলাতুল কদরের বরকত দান করুন এবং আমাদের রোজা, ইবাদত ও দোয়া কবুল করুন। আমিন। 🤲