W3Schools.com  

‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই সেরা’

লেখক:
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

সদ্য সমাপ্ত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ কিশোরী দল। সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নেপালের কাঠমান্ডু থেকে গতকাল দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায় বাংলাদেশ অন‚র্ধ্ব-১৬ জাতীয় নারী দল। বিমান বন্দরে চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও অভ্যর্থনা জানান এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) কাউন্সিল মেম্বার, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাহী সদস্য ও নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারপার্সন মাহফুজা আক্তার কিরণ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাফুফে’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নুরুল ইসলাম (নুরু) ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

এদের মধ্যে কেউ সাফজয়ী মেয়েদের গলায় ফুলের মালা পড়িয়ে দেন, কেউ বা মিস্টি মুখ করান সুরভী আকন্দ প্রীতি-ইয়ারজান বেগমদের। বাংলাদেশের নারী ফুটবল নিয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন মাহফুজা আক্তার কিরণ। বিমানবন্দরে তিনি নিজ প্রতিক্রিয়া গণমাধ্যমকে জানান, দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে ‘নাম্বার ওয়ান’ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন,‘এক মাসের ব্যবধানে সাফের দুইটি বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নেপাল থেকে সিনিয়র সাফের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরেছে লাল-সবুজের মেয়েরা। এতেই প্রমাণ করে দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে বাংলাদেশ নাম্বার ওয়ান।’

নারী ফুটবলারদের এই অর্জনে সবাইকে ধন্যবাদ জানান কিরণ। তার কথায়,‘সম্মিলিত টিম ওয়ার্কে আমাদের এই সাফল্য। মেয়েরা মাঠে যেমন কষ্ট করে। তাদের সঙ্গে প্রত্যেক কোচিং স্টাফের নিরলস পরিশ্রম এবং আমাদের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই এমন সাফল্য আসে।’

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে প্রধান কোচ হিসেবে বর্তমানে কাজ করছেন জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার ও কোচ সাইফুল বারী টিটু। দেশের ফুটবলে অন্যতম শীর্ষ এই কোচ নারী দলে কাজ করা একটু বিশেষ ধরন বলে আখ্যায়িত করলেন,‘মেয়েদের জন্য আলাদা ফিলিংস থাকে পুরো দেশবাসীরই। যা কাজ করতে অনেক সহায়ক করে আমাদের।’ অনুর্ধ্ব-১৬ দলের অনেক নারী ফুটবলারই প্রথমবারের মতো বিদেশ সফর করেছেন। অনেকেরই দেশের জার্সিতে প্রথম খেলা। এমন প্রতিক‚লতার মধ্যেও শিরোপা জয় সম্পর্কে টিটু বলেন,‘অনুর্ধ্ব ১৬ মানে প্রতিদ্ব›িদ্বতার পর্যায়ে মাত্র প্রবেশ করা। প্রথমবার তারা বিদেশ ও জাতীয় দলে খেললেও তারা সর্বোচ্চ এফোর্ট দিয়েছে। যা অত্যন্ত সন্তোষজনক। তারা মাঠে লড়েছে আর বাইরে বাফুফের সভাপতি থেকে শুরু করে সবাই সহযোগিতা করেছেন।’

সাফের বয়সভিত্তিক দুটি আসরে টানা শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ। একটি ঢাকায়, অন্যটি কাঠমান্ডুতে। তাই কোচ টিটুর কাছে এমন জয়ের অননুভূতি অন্যরকম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘ঢাকায় সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের সঙ্গে যুগ্মভাবে শিরোপা জিতেছিলাম। আর কাঠমান্ডুতে একই দলের বিপক্ষে একক শিরোপা জয়। আসলে দেশের বাইরে ট্রফি জেতার আনন্দটাই অন্যরকম। সেখানে সবকিছু ভিন্ন। তাই চ্যালেঞ্জটা বেশি। তবে ঢাকাতেও চ্যালেঞ্জটা কম নয়। দুই স্থানে জয়ের আনন্দ একটু ভিন্ন বলতে পারেন।’ টিটি যে২াগ করেন,‘ফাইনাল মানেই স্নায়ুচাপের লড়াই। অনূর্ধ্ব-১৯ ও ১৬ দুই টুর্নামেন্টেই খানিকটা স্নায়ুচাপ ছিল আমার দলের ফুটবলারদের। সেটা নিরসনের চেষ্টা করেছি আমি। অনেক সময় অনেকে প্রেসার নিতে পারে না। দু’টি ফাইনালেই আমরা প্রথমার্ধে ভালো খেলতে পারিনি। ফাইনালও অন্য ম্যাচের মতোই একটি বলে স্নায়ুচাপ কাটানোর চেষ্টা করেছি।’

সাফজীয় মেয়েদের প্রশংসা করে টিটু আরও বলেন,‘আমার দলের মেয়েরা ছোটবেলা থেকেই শৃঙ্খলা মেনে বড় হয়েছে। ওরা কঠোর পরিশ্রম করতে জানে। যা বলি, তা মেনে চলার চেষ্টা করে। এছাড়া মাঠে ওরা খেলেছে। ট্রফি জয়ের পেছনে ওদের কৃতিত্বটাই বেশি। এখানে আমি শুধু কিছু দিন কোচিং করিয়েছি। খেলেছে তো ওরাই।’

ফাইনালের জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম। যিনি টাইব্রেকারে ভারতের তিনটি শট রুখে দিয়ে বাংলাদেশকে ট্রফি এনে দিতে সহায়তা করেন। সেই ইয়ারজানের প্রশংসা করে টিটু বলেন,‘আমরা আগেই টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছিলাম। ইয়ারজান ভালো গোলরক্ষক। ওর পজিশন জ্ঞান বেশ ভালো। ওর ওপর আমার আত্মবিশ্বাস ছিল অনেক। ইয়ারজান যা করেছে তা অনন্য। টাইব্রেকারে যেভাবে সেভ করেছে, তাতে আমাদের চ্যাম্পিয়ন হতে বেগ পেতে হয়নি।’

ইমি/পথিক নিউজ

  • ‘দক্ষিণ এশিয়ায়
  • বাংলাদেশই সেরা’