বেশিরভাগ সিগারেটের প্যাকেট আবর্জনার স্তূপে গিয়ে পড়ে। তবে সার্বিয়ার ক্রাগুইয়েভাৎস শহরে সাদ্রুগার্স্টয়ো নামের এক সংঘ সেগুলিকে নতুন পণ্যে রূপান্তরিত করে। ৩০ বছরের বেশি বয়সের মনোসামাজিক প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এই সংঘ গঠন করা হয়েছিল।
আনা ভ্লাশকোভিচ মনোবিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন। তিনি এই সংঘের জন্য অর্থ সংগ্রহ ও জনসংযোগের কাজ করেন। সাদ্রুগার্স্টয়োর জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে আনা বলেন, ‘‘আমাদের মৌলিক আইডিয়া ছিল এই যে এই জায়গায় কোনো চিকিৎসা বা পেশাগত থেরাপির ব্যবস্থা থাকবে না। বরং বিকাশগত ব্যাধিগ্রস্ত মানুষদের জন্য নিরাপদ এক জায়গা হবে এটি। সেখানে তাঁরা নিজেদের সম্ভাবনা উজাড় করে দিতে পারবেন। প্রতিদিন এই সংঘে বিশাল পরিমাণ খালি সিগারেটের প্যাকেট রিসাইকেল করা হয়। শুধু স্থানীয় পর্যায়ে নয়, গোটা সার্বিয়া থেকে সেগুলি দান হিসেবে আসে। ব্যবহৃত সিগারেটের প্যাকেট দিয়ে নতুন ও উচ্চ মানের গ্রাফিক পেপার তৈরি করা হয়।”
সিগারেটের প্যাকেটে বড় মাত্রায় সেলুলোজ থাকে। সে কারণে অনেক শিল্পী যন্ত্র দিয়ে তৈরি কাগজের বদলে এমন হাতে তৈরি কাগজ পছন্দ করেন। গ্রাফিক পেপার ছাড়াও সেখানে ছবি, বুকমার্ক ও ক্যালেন্ডার তৈরি হয়।” ইচকো, দ্রাগানচে ও জনি প্রতিদিন কাজে ব্যস্ত থাকেন। আনার মতে, ইচকো, নিকোলা ও দ্রাগানচে টিমের সবচেয়ে পরিশ্রমী সদস্য। কাজের বাইরেও তারা পরস্পরের বন্ধু। মাত্র দুই বছর আগে এই সংঘ গঠিত হলেও শহর ও গোটা সার্বিয়ার অনেক মানুষ তাদের কাজ পছন্দ করেন।
আনা ভ্লাশকোভিচ বলেন, ‘‘আমরা বিনামূল্যে কাচামাল পাই। খালি সিগারেটের প্যাকেট আনতে মানুষ উদ্বুদ্ধ বোধ করেন। এর মাধ্যমে সমাজেরও উপকার হচ্ছে। কারণ এই প্রক্রিয়ায় শুধু বিকাশগত ব্যাধিগ্রস্ত মানুষদের কাজ দেয়া হয়। আইনের চোখে তারা অদৃশ্য। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও নিজস্ব উপার্জনের কোনো পথ তাদের সামনে খোলা নেই।
আবর্জনা সাফাই এবং বিভিন্ন মেলা ও আর্ট স্কুলে পণ্য বিক্রির দৌলতে এই প্রকল্প সম্ভাব্য দাতাদের কাছে পরিচিতি পাচ্ছে বলে সংঘের কর্তাব্যক্তিরা নিশ্চিত। ফলে আগামী কয়েক বছরে আরো বড় জায়গায় আরো বেশি প্রতিবন্ধি মানুষের কর্মসংস্থানের আশা করছেন তারা।
ইমি/পথিক নিউজ