কর্মব্যস্ত জীবনে সারা দিনের ইঁদুরদৌড়। দিনের অনেকটা সময় খালিপেটে থাকা, কখনো আবার প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে ফেলা। দিন দিন কমছে ঘুমের পরিমাণ। শরীরে কোনো রকম গোলমাল হলেই চিকিৎসকের পরমর্শ ছাড়াই দেদার ওষুধ খাওয়া। এসব কারণে ক্ষতি হচ্ছে লিভারের।
‘সিরোসিস অফ লিভার’ শব্দবন্ধটি ক্যানসারের চেয়ে কোনো অংশে কম আতঙ্কের নয়। বরং কিছু ক্ষেত্রে এই রোগ ক্যানসারের চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর। কারণ, এই রোগ সহজে ধরা পড়ে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এতটা দেরি হয়ে যায় যে, তখন আর কিছু করার থাকে না। তবে শরীরে এই রোগ বাসা বাঁধলে, তার কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।
তলপেটে তরল জমা : দীর্ঘ দিনের লিভারের অসুখ থাকলে পেটের তলদেশে তরল জমা হতে পারে। দেখে মনে হতে পারে, পেট ফুলে আছে। এই রকম সমস্যা হলে সতর্ক হোন। হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার পাশাপাশি ভুঁড়ি বেড়ে গেলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
পেটের উপর দিকে ব্যথা : দীর্ঘ দিন ধরে লিভারের অসুখ থাকলে পেটে তরল জমা হয়ে পেট ফুলে যেতে পারে। সেখান থেকে পেটে ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। লিভারে জল জমে আকারে বড় হয়ে গেলে তা আশপাশে থাকা অন্যান্য প্রত্যঙ্গকে চাপ দেয়, তখন ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
কালশিটে দাগ : শরীরে ঘন ঘন কালশিটে পড়ে কি? তা হলে সতর্ক হোন। লিভার ভিটামিন কে-এর সাহায্যে একটি প্রোটিন উৎপাদন করে, যা রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে। লিভার পুরনো ও ক্ষতিগ্রস্ত রক্তের কোষগুলির ভাঙনেও সহায়তা করে। লিভার বিকল হতে শুরু করলে এটি প্রয়োজন মতো প্রোটিন উৎপাদন করতে পারে না। কাজেই সহজেই কালশিটে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
জন্ডিস : জন্ডিস খুবই পরিচিত একটি অসুখ। এই অসুখে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যায়। লিভার থেকে নিঃসৃত হলুদ-কমলা রঙের তরল বিলিরুবিনের পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে জন্ডিস হয়। লিভারে ক্ষত তৈরি হলে লিভার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। ঘন ঘন জন্ডিস লিভার সিরোসিসের লক্ষণ হতে পারে।
পা ও গোড়ালিতে জ্বালা : পা ও গোড়ালিতে জ্বালা অনুভূত হলে এখনই সতর্ক হোন। অ্যালবুমিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে গেলে এই রকম সমস্যা হয়। এই প্রোটিন রক্তনালি থেকে অন্যান্য টিস্যুতে রক্তের ছড়িয়ে পড়াকে প্রতিহত করে। রক্তে এই তরল প্রোটিনের পরিমাণ কমে গেলে তা রক্তনালিকায় জমতে শুরু করে।
ইমি/পথিক নিউজ