আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ভারতের ১৮ বছর বয়সী ললিত পাতিদার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন সবচেয়ে লোমশ মুখের জন্য। প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে ২০১.৭২ চুল নিয়ে তিনি এই অনন্য রেকর্ড গড়েছেন।
ললিত “হাইপারট্রাইকোসিস” নামক বিরল রোগে আক্রান্ত, যা ‘ওয়্যারউলফ সিনড্রোম’ নামে পরিচিত। তার মুখের ৯৫ শতাংশেরও বেশি অংশ ঘন লোমে ঢাকা। গিনেস বুক অনুসারে, মধ্যযুগ থেকে নথিভুক্ত মাত্র ৫০টি কেসের মধ্যে তিনি একজন।
শৈশবে তার মুখের অস্বাভাবিক লোমশতা অনেককে বিস্মিত করত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহপাঠীরা প্রথমে তাকে দেখে ভয় পেত, তবে সময়ের সাথে সাথে তারা তাকে আসল রূপে চিনতে শেখে। ললিত বলেন, “প্রথমে তারা আমার চেহারা দেখে অবাক হতো, কিন্তু পরে বুঝতে পারে আমি ভেতরে ঠিক তাদের মতোই।“
বিভিন্ন সময়ে তাকে চেহারা পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়া হলেও তিনি সেগুলোকে গুরুত্ব দেননি। “আমি আমার চেহারা ভালোবাসি এবং পরিবর্তন করতে চাই না,” বলেন ললিত। যদিও মাঝেমধ্যে নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়, বেশিরভাগ মানুষ তার প্রতি সদয়।
সম্প্রতি, তিনি ইতালির মিলানে “লো শো দেই রেকর্ড” টেলিভিশন শোতে অংশ নেন, যেখানে বিশেষজ্ঞরা তার মুখের লোমের ঘনত্ব মূল্যায়ন করেন। এক ট্রাইকোলজিস্ট ছোট ছোট অংশ কামিয়ে চুলের ঘনত্ব নির্ধারণ করেন এবং নিশ্চিত করেন যে ললিত রেকর্ডটি ভেঙেছেন। স্বীকৃতি পেয়ে তিনি বলেন, “আমি নির্বাক! এত আনন্দ লাগছে যে কী বলব বুঝতে পারছি না।“
ললিত পাতিদার কেবল তার রেকর্ডের জন্য নয়, সামাজিক মাধ্যমেও জনপ্রিয়। ইনস্টাগ্রামে তার ২,৬৫,০০০-এর বেশি ফলোয়ার এবং ইউটিউবে ১,০৮,০০০ সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি নিয়মিতভাবে নিজের দৈনন্দিন জীবনের ঝলক শেয়ার করেন।
পরিবারের অবিরাম সমর্থনে অনুপ্রাণিত ললিত বিশ্ব ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন এবং বিভিন্ন সংস্কৃতি অন্বেষণ করতে চান। নিজের অনন্য পরিচয়ে গর্বিত এই তরুণ প্রমাণ করেছেন, আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মনোভাব দিয়েই জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়।