আমাদের দেশের একটি অতি পরিচিত গাছের নাম জারুল গাছ। গ্রীষ্মের এই প্রকৃতিকে উত্তপ্ত দিনের ব্যথা ভুলিয়ে মাতিয়ে রাখে জারুল ফুল। জারুল ফুলের গাছ সাধারণত রাস্তার ধারে বা জমির আইলে পরিত্যক্ত অবস্থায় আপনাতেই জন্মায়। এই ফুলের বেগুনি পাপড়ির দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ঘায়েল করে প্রতিটি প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের কোমল হৃদয়।
জারুল গাছ আসলে পাতাঝরা বড় আকারের বৃক্ষ। এই ফুল গাছের ধূসর বা পিতাভ ধূসর রঙের বাকল খুবই মসৃণ হয়ে থাকে। তবে জারুল গাছের কাঠ খুবই শক্ত ও টেকসই। যা আপনি খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি জারুল গাছের কাঠ কিন্তু আপনি পানির নিচেও ব্যবহার করতে পারবেন। এ গাছ সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ ফুট বা তদূর্ধ্ব উচ্চতার হয়ে থাকে। সৌন্দর্যের প্রতিবিম্ব এই জারুল ফুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো ল্যাগারস্ট্রোইয়েমিয়া স্পেসিওসা (Lagerstroemia speciosa)।
ছয়টি মুক্ত পাপড়িতে গঠিত এই নয়নাভীরাম জারুল ফুল এপ্রিল থেকে জুন মাসের দিকেই থোকায় থোকায় ফুটে থাকে। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই জারুল ফুলের ফল পরিপক্ব হয়। বাড়ি-ঘর, নৌকা, লাঙ্গল, বাসের বডি, পুল, ট্রাক, বানানোর কাজে জারুল কাঠ ব্যবহার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে জারুল গাছের কাঠ অতি গুণসম্পন্ন ও উন্নতমানের। এজন্য এর কাঠ উন্নতমানের খুঁটি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
জেনে রাখা ভালো, জারুল গাছের পাতা ও বাকলে ট্যানিন পাওয়া যায়। এছাড়াও জারুল একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন গাছ। এ গাছের ছাল, বীজ ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আবার জ্বর, কাশি, ও অনিদ্রার মতো সমস্যায় জারুল গাছ খুবই কার্যকরি।
এ ফুল গাছ, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার এবং আমাদের দেশে খুবই প্রচলিত একটি গাছ। বাংলাদেশে এ ফুল বেশি দেখতে পাওয়া যায় প্রধানত চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে।