নাসিরনগর মাধবপুর শিল্পকারখানার বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে ফসল ও ফসলী জমি দুষিত হচ্ছে পরিবেশ

মো: আব্দুল হান্নান :

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থান নাসিরনগর,ফান্দাউক, ছতিয়াইন রতনপুরে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি শিমুলঘর থেকে শুরু করে,ছাতিয়াইন, রতনপুর হয়ে অলিপুর,জগদীশপুর,শাহপুর সহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার দু- পাশে গড়ে উঠা অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে  শিল্প কারখানার কেমিক্যালযুক্ত খালের পানি উপচে পড়ে কৃষকের জমিতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।তাতে নষ্ট হতে চলেছে কৃষকের জমির উর্বরতা আর ফসল।কালো দুয়ার কারনে দুষিত হচ্ছে পরিবেশ।অপরদিকে এ সমস্ত খালবিল হয়ে পড়েছে মাছ শুন্য।ছাতিয়াইন রতনপুরের মধ্যবর্তী স্থানে পানি নিস্কাশনের খালবন্ধ করে নতুন করে গড়ে উঠতে শুরু করেছে আরো কয়টি শিল্পকারখানা।আবার অনেক কারখানাতে যাতায়াতের জন্যও ভরাট করা হয়েছে পানি নিস্কাশনের খান।সেখানে প্রশাসন যেন নির্বিকার।

শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ক্ষতি হয়েছে সাতপাড়িয়া সহ পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকার কৃষকদের ফসল। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খালের আশপাশের কৃষি জমি। শিল্প কাখানার নানা রকমের বিষাক্ত বর্জ্যের পানিতে কৃষি জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। ফলে এসব জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে  প্রান্তিক কৃষক। 

সরজমিনে ঘুরে দেখা যায় , খালের পানিতে আবাসস্থল হারাচ্ছে দেশিয় প্রজাতির মাছ ও বিভিন্ন প্রকারের জলজপ্রাণি। খালের পাড়ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা গাছপালাও মারা যাচ্ছে। এতে মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে পরিবেশ। ফলে খালকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এসব এলাকার কৃষিনির্ভর অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে।তাছাড়াও উক্ত রাস্তাটি দিয়ে পথচারীরা যাতায়াতের সময় কারখানার দুর্গন্ধে নাক চেপে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

জানা যায়, কয়েক বছর আগেও এই খালের পানি ব্যবহার করে সব ধরনের চাষাবাদ করা যেতো। এলাকায় বিভিন্ন শিল্প কারখানা নির্মাণের পর এর পানি দূষণ হওয়া শুরু হয়। পানি ব্যবহারের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি উপচে কৃষি জমিতে উঠে যায়। এতে ধানের খেতে আগের মতো ফসল তো হয়ই না, এখন খালের পানি খেতে ঢুকলে ধান গাছের চারাও মরে যায়।

গত কয়েক বছরে মাধবপুর উপজেলার হরিতলা এলাকায় বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। এ শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা এলাকাবাসীর জন্য যেমন আশীর্বাদ ঠিক কিছু কিছু স্হানীয় গরীব ও অসহায়দের জন্য অভিশাপের সাথেও তুলনা করা হয়। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, একশ্রেণির জমির দালাল আইনের ফাঁক ফোঁকর ব্যবহার করে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে আঁতাত করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন সহ  জাল জালিয়াতির  মাধ্যমে জুটিয়ে নিয়েছে কোম্পানি প্রতিষ্ঠার ছাড়পত্র। এতে আদৌ পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন আছে কি না, তা ভাবার বিষয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ

এরমধ্যে গ্যাকো ক্যামিক্যালস,গ্লোরী,এগ্রো প্রোডাক্ট, জাস রুটোপ্লেক্স ইন্ডাট্রিজ,পাইনিয়ার ডেনিম কোম্পানি লিমিটেড,বাদশা গ্রুপ কোম্পানি), নাহিদ টেক্সটাইল এবং কপারটেক কোম্পানির বর্জ্য আবর্জনা ও বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত পানিতে উপজেলার শিব-জয়নগর, সাতপাড়িয়া, পিয়াইম, সাকুচাইল, দাসপাড়াসহ কোম্পানি গুলোর পশ্চিমা অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের  খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ফসলি জমিসহ খাল বিলের পানি নষ্ট হয়ে গেছে।ওইএলাকা গুলোতে মরে যাচ্ছে হাঁস মোরগ গরু চাগল মহিষ সহ গবাদিপশু । দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। এইসব এলাকার শিশু সহ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ও লেগেই রয়েছে মারাত্বক রোগ বালাই। স্বাস্থ্যহীনতায় ভোগছে শিশুসহ এসব এলাকার বাসিন্দারা।এলাকাবাসী এ সমস্যা সমাধানে পরিবেশবাদী সংগঠন গুলোর সহযোগিতা কামনা করে। তাছাড়াও নদী সুরক্ষা সংগঠন নোঙর,পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী সহ এলাকার সচেতন মহল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/pothiknews/public_html/wp-includes/functions.php on line 5309