পদত্যাগ করেছেন ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ। গতকাল সোমবার প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। খবর: আল জাজিরা।
পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে শাতায়েহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন এবং পশ্চিম তীর-জেরুজালেমে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমি এ পদক্ষেপ নিয়েছি।
তার এই পদত্যাগের মধ্য দিয়ে কার্যত পুরো মন্ত্রিসভার পতন ঘটল।
শাতায়েহ বলেন, গাজার পরিস্থিতি এখন আর আগের মতো নেই। নতুন একটি বাস্তবতা সেখানে সৃষ্টি হয়েছে আর সেই বাস্তবতায় ফিলিস্তিনের অখণ্ডতা ও ঐক্য ধরে রাখতে প্রয়োজন নতুন সরকার, নতুন রাজনীতি। আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়া এবং এবং এমন একটি সরকারকে ক্ষমতায় বসানো, যে সরকার পুরো ফিলিস্তিনের ঐক্য দৃঢ় করতে পারবে। আমার পদত্যাগের মূল কারণ এটাই।
পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমÑতিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত ফিলিস্তিন। তিন অঞ্চলই একসময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দল ফাতাহ এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর জোট প্যালেস্টাইন অথরিটির (পিএ) অধীন ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে।
তার পর থেকে ফিলিস্তিনে দুটি সরকার ক্রিয়াশীলÑপিএ ও হামাস। পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম এখনও পিএ’র অধীন রয়েছে, আর গত ১৯ বছর ধরে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস।
১৯৫৮ সালে পশ্চিম তীরের নাবলুস জেলার তেল শহরে জš§ নেয়া শাতায়েহ ব্যবসায় প্রশাসন ও অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রিধারী। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স থেকে ১৯৮১ সালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম তীরের বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্যে দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন শাতায়েহ। ১৯৮৯ সাল
থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি ফিলিস্তিনের নির্বাচন কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনের সরকারের কর্মসংস্থান ও আবাসন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন তিনি। পরে ২০১৯ সালে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হন শাতায়েহ।
ইমি/পথিক নিউজ