প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো নরসিংদীর দুর্গাপূজা

লেখক: Fardin Hasan
প্রকাশ: ১ বছর আগে

বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে নরসিংদীতে শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে পাহাড়িয়া নদী, হাড়িধোয়া নদী ও শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে কৈলাসে ফিরে গেলেন দেবী দুর্গা।এর আগে মণ্ডপগুলোতে চলে সিঁদুর খেলা আর আনন্দ-উৎসব। হিন্দু সধবা নারীরা প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে দেন, নিজেরা একে অন্যকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। চলে মিষ্টিমুখ, ছবি তোলা আর ঢাকের তালে তালে নাচ-গান। মঙ্গলবার সকালে দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকাল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন।

সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে, যা তার বাবার গৃহ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য।

এ প্রবৃত্তিগুলো বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এই আয়োজনের উদ্দেশ্য। চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে গত ২০ অক্টোবর থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়।

পরবর্তী ৫ দিন উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়। প্রতিমা বিসর্জন দেখতে বিভিন্ন নদীর ঘাটে হাজারো মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

শিবপুর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, এবছর উপজেলায় ৭২টি মণ্ডপে শান্তিপূর্ণ ভাবে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিজয়ী হয়েছেন দুর্গা মা। এজন্য আজ আমাদের আনন্দের দিন। আমরা উৎসব করি। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই জানাচ্ছি বিজয়ার শুভেচ্ছা।

সংবাদমাধ্যমকে শিবপুর মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য যাবতীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শাহ মো: সজীব বলেন, প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে যেন কোনো বিশৃঙ্খলা বা দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন ও পুলিশ। শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজা উদযাপন শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।