কাঁচা বাদাম’-এর স্রষ্টা এখন স্বপ্নের বাড়িতে, কিন্তু নেই গানের মালিকানা

লেখক:
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে
কাঁচা বাদাম’

“আমি বাদাম বিক্রি করতাম… আর কেউ আমার ফোন চুরি করে নিত!” — এমন এক জীবনের গল্পই আজ কিংবদন্তি হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া গান ‘কাঁচা বাদাম’-এর স্রষ্টা ভুবন বাদ্যকরের। একসময় গ্রামের পথে বাদাম বিক্রি করা এই মানুষটি এখন থাকেন ঝাঁ চকচকে দোতলা পাকাবাড়িতে।

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার ছোট্ট এক কুঁড়েঘর থেকে জীবন শুরু করা ভুবনের ভাগ্য এক রাতেই বদলে দেয় একটি গান। রাস্তার পাশে বাদাম বিক্রি করতে করতে তিনি বানিয়েছিলেন নিজের জীবনের গল্প নিয়ে গানটি— ‘কাঁচা বাদাম’।

ভুবন বাদ্যকর বলেন,“আমি বাদাম বিক্রি করতাম। তখন অনেকেই আমার ফোন চুরি করে নিত। ভাবলাম, এই বিষয়টা নিয়েই একটা গান বানাবো, সবাই শুনে মজা পাবে।”

স্থানীয় এক যুবক তাঁর গানটি মোবাইলে রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করলে সেটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। বিশ্বজুড়ে শুরু হয় ‘কাঁচা বাদাম চ্যালেঞ্জ’। বিভিন্ন ভাষায় গানটি কাভার হয়, মিউজিক ভিডিও তৈরি হয়, এমনকি বলিউড পর্যন্ত পৌঁছে যায় এই সুরের ঢেউ।

ভাইরাল হওয়া গানের জেরেই ভুবনের জীবনে আসে আমূল পরিবর্তন। আগে যেখানে কুঁড়েঘরে থাকতেন, এখন সেখানে দাঁড়িয়ে আছে ঝকঝকে দোতলা পাকাবাড়ি। নতুন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ভুবন বাদ্যকর গর্বভরে বলেন,“এখন এটা আমার বাড়ি।”

তবে সুখের মাঝেও থেকে গেছে কিছু আক্ষেপ। কারণ, যেই গান তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল, সেই গানের কপিরাইট আর তাঁর হাতে নেই।

ভুবন বলেন,“আমি বোম্বে গিয়েছিলাম, ওখানে আমাকে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা দেয়। পরে কলকাতার এক ডিজি আমাকে ১ লাখ টাকা দেন। কিন্তু পরে জানলাম, গানের কপিরাইট আমার কাছে নেই। আমাকে কেউ বড় স্বপ্ন দেখিয়ে নথিতে সই করিয়ে নিয়েছে, আর সেইভাবেই গানের স্বত্ব কেড়ে নিয়েছে।”

আজও সেই আক্ষেপ নিয়েই বাঁচেন ভুবন বাদ্যকর। তবু তিনি বলেন,“মানুষ আমার গান ভালোবেসেছে, এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া।”