বগুড়া অনার্স পাস না করেই জাল সনদে শিক্ষীকা

লেখক: মোস্তফা আল মাসুদ
প্রকাশ: ৩ দিন আগে
বগুড়া অনার্স পাস না করেই জাল সনদে শিক্ষীকা

বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : অনার্স পাশও করেনি, জাল সনদে শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছিলেন বগুড়ার ধুনটে সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিম। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদন্তসাপেক্ষে স্নাতকের জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন।

রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বগুড়ার ধুনট পৌরসভার পশ্চিম ভরনশাহী গ্রামের হাবিবা সুলতানা জানান, ২০২৩ সালে ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগে সার্কুলার দেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তফিজ উদ্দিন। বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ওই পদে আবেদন করেন হাবিবা সুলতানা। কিন্তু যোগ্যতা থাকার পরও চাকরি পাননি হাবিবা।

বগুড়া অনার্স পাস না করেই জাল সনদে শিক্ষীকা

তিনি অভিযোগ করেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তফিজ উদ্দিন অনৈতিক সুবিধা নিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মিমকে চাকরি দেন। পরে তিনি খোঁজ করে জানতে পারেন, মিম স্নাতক (বিএসসি সম্মান) পাসের জাল সনদপত্র দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিকার পেতে তিনি গত ২০ জানুয়ারি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ গত ৯ মার্চ থেকে তদন্ত শুরু করেন। তিনি মিমকে তার সব শিক্ষা সনদপত্রসহ ডেকে পাঠান। এরপর সনদপত্রগুলো শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। এসএসসি ও এইচএসসির  সনদ সঠিক হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিএসসি সম্মানের (স্নাতক) সনদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রবিবার বিকালে বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ জানান, তদন্তে ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিমের স্নাতক পাসের সনদ জাল প্রমাণিত হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি (মিম) ডিগ্রি পাস করেননি মর্মে স্বীকার করেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে চিঠির মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, খণ্ডকালীন শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিম তার স্নাতক সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরি নিয়েছিলেন। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্তে এর সত্যতা পেয়েছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, চলমান এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে খণ্ডকালীন ওই শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস মিম ফোন না ধরায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত শুরুর আগে তিনি বলেছিলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। শত্রুতা করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

  • না করেই জাল
  • বগুড়া অনার্স পাস
  • সনদে শিক্ষীকা