ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবহুল স্থানে অগ্নি-নির্বাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের বরাবর লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে মাল্টি-পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (ম্যাফ)। বৃহস্পতিবার (তারিখ) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ আবেদনপত্র দাখিল করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ম্যাফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবহুল স্থানে অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনার হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব ঘটনায় প্রাণহানি ও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঘটায় জনমনে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াও এ ধরনের ঝুঁকি থেকে মুক্ত নয়। এ প্রেক্ষাপটে জেলা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরি নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন বাধ্যতামূলক করা, ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় নিয়মিত অগ্নি মহড়া ও প্রশিক্ষণের আয়োজন, আবাসিক ভবনে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অগ্নি নিরাপত্তা যাচাই ও ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, অস্থায়ী খাবার দোকানে অগ্নি নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক করাসহ ১১টি সুপারিশমালা জেলা প্রশাসকের নিকট উপস্থাপন করা হয়।
এছাড়াও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জনসেবামূলক স্থাপনাগুলোর জন্য একটি আন্তঃবিভাগীয় ‘নিরাপদ শিক্ষা ও জনসেবা স্থাপনা সমন্বয় কমিটি’ গঠনের প্রস্তাবও দেয়া হয়, যাতে জেলা প্রশাসন, শিক্ষা অফিস, ফায়ার সার্ভিস, পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা একসাথে কাজ করতে পারে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এবিএম মোমিনুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সহ-সভাপতি জেলা বিএনপি, শামীম আহমেদ, আহবায়ক তরী বাংলাদেশ, খালেদা মুন্নী, অর্থ সম্পাদক মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম, মো. সাঈদ হাসান সানি, সাবেক আহবায়ক পৌর শাখা ছাত্রদল, সমীর চক্রবর্তী, সদস্য সচিব জেলা ছাত্রদল, শাহাদাত হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি জেলা ছাত্রদল, শাহাদাত হোসেন ভূইয়া (জিমি হৃদয়), যুগ্ম আহবায়ক জেলা ছাত্রদল, আব্দুল্লাহ আল গাফফার রিমন, যুগ্ম আহবায়ক জেলা ছাত্রদল,গণঅধিকার পরিষদ এর সিনিয়র সহসভাপতি সাংবাদিক লিটন হোসাইন জিহাদ, সদস্য ইমি আক্তার, ওমর ফারুক, আহবায়ক ছাত্র ইউনিয়ন জেলা শাখা, মুনিয়া মাহিন উদীচী, যুগ্ম আহবায়ক ছাত্র ইউনিয়ন জেলা শাখা, আজিজী কেন্দ্রীয় সংগঠক, এনসিপি (আলেম ইউং) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদস্য শেখ আরিফ বিল্লাহ প্রমুখ
ম্যাফ নেতৃবৃন্দ বলেন, “শুধু আগুন নেভানো নয়, আগুন লাগার আগেই প্রস্তুত থাকাটা এখন সময়ের দাবি। শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।”
সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ২০১৯ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ম্যাফ বিভিন্ন সামাজিক ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এর আগে তারা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, নারী-নিরাপত্তা, যুব নেতৃত্ব উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সফল কর্মসূচি পালন করেছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “সচেতন নাগরিকদের এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমরা আবেদনটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবো এবং প্রয়োজনীয় বিভাগীয় আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেবো।”
সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদ্যোগ জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে বলে মন্তব্য করেন জেলার অভিভাবক ও সচেতন মহল