বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞান জগতের সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত বিষয় হলো এআই বুদ্ধিমত্তা। বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকসের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, সারা পৃথিবীতে প্রায় ৩০ কোটির মতো মানুষের পূর্ণকালীন চাকরিকে প্রতিস্থাপিত করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। যার মানে দাঁড়ায়, নিকট ভবিষ্যতে মানুষের কর্মক্ষেত্রের একটা বিশাল জায়গা কুক্ষিগত করে নেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ যারা শ্রম বিষয়ক চাকরির সাথে জড়িত, তাদের মধ্যে অন্তত ৪ ভাগের একভাগ চাকরি হারাবে। তবে প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয় যে নতুন এই প্রযুক্তির ফলে নতুন চাকরির ক্ষেত্র ও উৎপাদিত দ্রব্যের উৎপাদনশীলতাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
গোল্ডম্যান স্যাকসের সেই প্রতিবেদনে জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। গুগলের তৈরি বার্ড জেনারেটিভ কিংবা ওপেনএআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় এআই প্রযুক্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তবে এই প্রযুক্তি ধীরে ধীরে আরোও বিকশিত হতে থাকলে কাজ হারাবে অনেক মানুষ এ ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।
তাই এ বিষয়ে তৎপর পশ্চিমা অনেক দেশের প্রশাসন। ব্রিটিশ প্রযুক্তি মন্ত্রী মিশেল ডনেলান দ্য সান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাতে আমাদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার বদলে আমাদের কাজকে আরও উন্নত করার জন্য সহায়ক হয়, আমরা সেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।
‘ অক্সফোর্ড মার্টিন স্কুলের ফিউচার অব ওয়ার্ক বিভাগের পরিচালক কার্ল বেনেডিক্ট ফ্রেএর মতে, ‘আমি শুধু একটা ব্যাপারে নিশ্চিত যে, জেনারেটিভ এআই কত সংখ্যক চাকরিকে প্রতিস্থাপিত করবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।’ এদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে শুধু চাকরি হারানোর বিষয়টিই নয়, বরং কমে যেতে পারে মানুষের বেতন ভাতাও।
বিশেষজ্ঞদের মতে , জেনারেটিভ এআইয়ের অগ্রযাত্রা তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির মতো হয়ে গেলে অনাগত ভবিষ্যতে তা মানুষের চাকরির বাজার নিয়ন্ত্রণ, চাকরির সংখ্যা ও বেতন কমানোর মত বিষয়গুলো ঘটাবে।