অপ্রত্যাশিত রয়ে গেছে কন্যাশিশু

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুরুষের পাশাপাশি এগিয়ে যাচ্ছে নারীও। শত বাধা পেরিয়ে সব ক্ষেত্রে হয়ে উঠছে স্বাবলম্বী। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের সব ক্ষেত্রে এখন নারীর শক্ত অবস্থান। তবু সামাজিকভাবে বিভিন্ন দিক থেকে এখনো দলিত। সন্তান জন্মের সময় এখনো প্রত্যাশায় থাকে ছেলে সন্তান। অপ্রত্যাশিত রয়ে গেছে কন্যাশিশু।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে যুদ্ধ-বিগ্রহ, সমাজ বা দেশে নতুন বা পুরোনো যে কোনো ধরনের অস্থিরতাতেই কন্যাশিশু ও নারীর ওপর নির্যাতন কমে না বরং তা সব সময় বাড়ে। এ নির্যাতন শুধু ঘরের বাইরেই নয়, নিজ ঘরেও ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। প্রতিনিয়তই ঘটে যাওয়া ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা সাধারণ মানুষকে করে তুলেছে আতঙ্কগ্রস্ত। নিজ দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কন্যাশিশুরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। লঙ্ঘিত হচ্ছে কন্যাশিশু ও নারীর মানবাধিকার। একটি সুস্থ সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কন্যাশিশুদের অধিকার, তাদের শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, মানসিক ও শারীরিক বিকাশ নিশ্চিতকরণসহ নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। কন্যাশিশু কারও বোঝা নয়, বরং সম্পদে পরিণত হতে পারে।

গর্ভবতী মায়েদের ওপর চালানো পাঁচ বছর আগের এক জরিপ থেকে জানা যায়, গর্ভবতী নারীদের ৯০ শতাংশের প্রত্যাশা প্রথম সন্তান ছেলে হোক। এর পরের সন্তান ছেলে বা মেয়ে হলেও সেটি নিয়ে তেমন ভাবনা তার থাকে না। অনেকেই দুটি সন্তান হওয়ার পর আবার সন্তান নেন ছেলের আশায়। পরপর তিনটি মেয়ে হওয়ার কারণে সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো ঘটনাও জরিপে উঠে এসেছে।

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাসিমা আক্তার জলি জাগো নিউজকে বলেন, গ্রামীণ পর্যায়ে ৮০ শতাংশ মানুষ মনে করে ছেলেই আমার সব। মেয়েকে বিয়ে দিলে চলে যাবে, তার বিয়েতে খরচ করতে হবে এবং মেয়ে ভবিষ্যতে দেখাশোনা করতে পারবে না সেই ধারণা ৮০ শতাংশ মানুষের। শহরের দিকে এই ধারণা কিছুটা কম, ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ মনে করে সন্তান মেয়ে হোক আর ছেলে হোক সবাই সমান।

‘কন্যাশিশুরাও বড় হয়ে ভালো কিছু করতে পারে, মানুষের সেই ধারণা আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। আমরা মনে করি মেয়েদের শিক্ষার হারও বেড়েছে। সরকারের দিক থেকে নেওয়া হয়েছে অনেক পদক্ষেপ। তবে এখনো কন্যাশিশুরা অনেকভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে, অভাব হচ্ছে তাদের নিরাপত্তার। সহিংসতা কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেড়েছে। বাল্যবিয়ে বেড়েছে, এটিকেও আমরা সহিংসতা বলবো। ধর্ষণও বেড়েছে, ডিজিটালি ভায়োলেন্স ইদানীং বেড়েছে।’

  • অপ্রত্যাশিত রয়ে গেছে কন্যাশিশু