নদীতে পানি নেই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকার ক্রেতার অভাব?

নদী ও বিল-ঝিলে দেখা নেই পানির। আষাঢ় মাস বিদায় নিয়েছে, প্রত্যাশিত শ্রাবণ মাসও বিদায় নিলো। প্রকৃতির ঋতুতে ধরা দেয়নি এবার বর্ষাকাল। এবার বর্ষায় নদী-নালা খাল-বিলে দেখা মেলেনি পানির সমারোহ। যেন বর্ষার প্রকৃতির প্রকৃত মৌসুম থেকে হারিয়ে গেছে বর্তমানকালে।

এ কারণে তিতাস, ডোলভাঙ্গা, মেঘনা নদীর শাখা নদীগুলোতে নৌকার হাটে চলছে যেন বিশষণ খরা। নৌকা তৈরীতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। হতাশ হয়ে পড়ছেন নৌকা তৈরির কারিগররাও।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মাওলাগঞ্জ নৌকার হাটের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নৌকা নিয়ে বসে আছে মাত্র একজন ব্যবসায়ী। বিক্রির জন্য ছোট ও মাঝারি আকারের ৩টি নৌকা সাজিয়ে রেখেছেন। ক্রেতা তেমন না থাকায় রৌদ্রের খরতাপে ছাতা মাথায় দিয়ে অপেক্ষায় বসে আছেন তিনি।

নৌকা বিক্রি করতে হাটে আসা অভিনাশ চন্দ্র বিশ্বাসের বাড়ি হোমনা উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামে। তিনি জানান, মাত্র ৩টি নৌকা নিয়ে হাটে এসেছেন তিনি। আগে প্রতি সাপ্তাহে গড়ে ৪০-৪৫টি নৌকা বিক্রি করতে পারতেন হাটে। এখন সাপ্তাহে ৭-৮টি নৌকা বিক্রি করতে পারেন।

উপজেলার দরিয়াদৌলত গ্রামের নৌকা ব্যবসায়ী জয়নাল মিয়া জানান, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নৌকার চাহিদা ভালো থাকত। এ বছর তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এখন আর হাটে নৌকা নিয়ে বিক্রি করতে যান না। কেউ অর্ডার করলে নৌকা তৈরি করে দেন তিনি। তাছাড়া সাড়ে ১০ হাত নৌকা তৈরিতে তার সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ ক্রেতারা তিন হাজার, সাড়ে তিন হাজার টাকার বেশি বলেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা মোকারম মিয়া বলেন, নদীতে পানি নেই, নৌকা কিনে করব কী? বর্ষার রূপ এখন প্রকৃতি থেকে হারিয়ে গেছে।

মাওলাগঞ্জ নৌকার হাঁটের ইজারাদাররা মো. খোকা মিয়া জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নৌকা বিক্রি হচ্ছে খুবই কম। বিক্রেতাদের এখন সারাদিনে ২-৩টি নৌকা বিক্রি করা দুরূহ। বাজারে তেমন নৌকা নাই। নদ-নদী ও খাল-বিলে পানি না থাকায় দেখা দিয়েছে নৌকার ক্রেতার অভাব।
সূত্র:bbarta24

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *