পুলিশ বলছে ডাকাত আসবে তাই নাসিরনগরে রাতভর ডাকাত আতংক

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

নাসিরনগর,ব্রাহ্মণবাড়িয়া, প্রতিনিধি : ২৬ অক্টোবর ২০২২ রোজ বুধবার দিবাগত রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে মাইকে ঘোষনা দিয়ে ‘পুলিশ বলছে ডাকাত আসতে পারে।পুলিশের এ ঘোষণা দ্রুতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়ায় ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে ডাকাত আতঙ্ক।জেলা থেকে আনা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। রাতে উপজেলার সকল প্রবেশপথে বসানো হয় চেকপোস্ট। উপজেলার প্রায় ১২৫টি গ্রামের মানুষের মাঝে রাতভর শুরু হয় ডাকাত আতঙ্ক।  উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন থেকে এই খবরে সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে হঠাৎ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুলিকুন্ডা গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মসজিদের মাইকে ঘোষণা করেন ‘পুলিশ বলছে এলাকায় ডাকাত এসে পড়েছে তাই সবাই ঘর ছেড়ে বের হয়ে আসুন।মুহূর্তেই সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। মানুষ লাঠিসোঁটা কুঁইচ,বল্লম নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায় । কিছুক্ষণ পর ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যও মসজিদের মাইকে ডাকাত আসার খবরটি প্রচার করেন। উপজেলার ১২৫ গ্রামে ছড়িয়ে যায় ডাকাত আতঙ্ক। এরপরই একযোগে উপজেলার সর্বত্র রাত জেগে দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করে মানুষ। কিন্তু সকালে বিভিন্ন ইউনিয়নে খবর নিয়ে জানা যায় কোথাও কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি।

নাসিরনগর থানা পুলিশের দাবি, সম্প্রতি পাশের উপজেলা মাধবপুর সহ বেশ কিছু এলাকায় গতকাল ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি ডাকাত দলকে ধরতে গিয়ে মাধবপুর থানা পুলিশের একটি দল নাসিরনগর ও চলে আসেন। আর সেই ডাকাত দলের সদস্যরা নাসিরনগরের বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে। তাই স্থানীয়দের সর্তক থাকতে বলা হয়েছিল।

হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুক মিয়া জানান, গত রাত ১২ঘটিকার সময় নাসিরনগর থানার ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার আমাকে ফোন করে বলেন, পাশের উপজেলা মাধবপুর থেকে একটি ডাকাত দল নাসিরনগর প্রবেশ করেছে। আপনারা নিজ নিজ এলাকায় লোকবল নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করেন। কোনো কিছুতে সন্দেহ হলে আমাদের ফোন করে জানাবেন। পরে আমি প্রায় ৫ শতাধিক লোক নিয়ে সারারাত পাহারা দেই।

গোকর্ণ ইউপির বাসিন্দা সৈয়দ আবেদুল্লাহ নিউটন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার আইডি থেকে পোস্ট করেন, নাসিরনগরে নাকি ডাকাতের বড় একটি গ্রুপ ঢুকেছে, সবাই সর্তক থাকুন এবং কিছু ঘটলে সাথে সাথেই নিজ এলাকার পুলিশ বিট অফিসারকে ইনফর্ম করুন।

চাতলপাড় ইউনিয়নের মো. আব্দুল হাকিম তার আইডি থেকে লেখেন, ২৩ জনের একটি ভয়ংকর ডাকাত গ্যাং নাসিরনগর প্রবেশ করেছে, সবাই সাবধান।

শুধু সৈয়দ আবেদ উল্লাহ নিউটন আর আব্দুল হাকিমই নয় এরূপ বহু ফেসবুক আইডি থেকে সারা রাত ভর ডাকতের বিষয়ে পোষ্ট করা হয়।

নাসিরনগর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, আমাদের পাশের উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বিভিন্ন ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। তাই নাসিরনগর উপজেলার মানুষকে সর্তক করতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।তিনি বলেন এ জন্য কোন কোন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ফোন করা হয়েছিল সর্তক থাকার জন্য।

সরাইল,আশুগঞ্জ,নাসিরনগরের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. আনিসুর রহমান বলেন, আমরা সবসময় সতর্ক থেকে কাজ করি। দুই দিন পূর্বে মাধবপুর উপজেলায় ডাকাতি হয়েছে। তাই নাসিরনগরের পুলিশ ও জনগণকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছিল।
নাসিরনগরে অতিরিক্ত পুলিশ আনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাকাতি হবে বলে আমাদের কাছে একটি তথ্য ছিল।তাই বাড়তি সর্তকতার কারনেই জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছিল।