প্রতিটি সপ্তাহে আসে একটি দিন, যার জন্য অপেক্ষা করে ফেরেশতারা, যার মাহাত্ম্যে কেঁপে ওঠে আসমান-জমিন – সেই দিনটি হলো পবিত্র শুক্রবার। ইসলামী পরিভাষায় একে “ইয়াওমুল জুমুআহ” বলা হয়।
এই দিনটির রয়েছে অগণিত ফজীলত ও বরকত, যা কুরআন ও সহীহ হাদীসে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে।
কেন শুক্রবার এত গুরুত্বপূর্ণ –?
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : “শ্রেষ্ঠ দিন হচ্ছে শুক্রবার। এই দিনেই আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়, জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়। কিয়ামতও শুক্রবারে সংঘটিত হবে।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৮৫৪)
কুরআনের আলোকে জুমার গুরুত্ব :–
আল্লাহ তাআলা বলেন: “হে ঈমানদারগণ! যখন জুমার দিন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বাণিজ্য ত্যাগ করো। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পারো।
(সূরা আল-জুমুআহ, আয়াত: ৯)
এ আয়াতে শুধু নামাজ নয়, বরং গোটা দিনটিকে আল্লাহর স্মরণ ও ইবাদতের জন্য উৎসর্গ করতে বলা হয়েছে।
জুমার দিনে দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত :–
রাসূল (সা.) বলেছেন : “জুমার দিনে একটি মুহূর্ত রয়েছে, যখন কোনো বান্দা দোয়া করলে তা অবশ্যই কবুল হয়।”
(সহীহ বুখারী: ৯৩৫ | সহীহ মুসলিম: ৮৫২)
অনেক আলেমের মতে, এই সময়টি আসরের পর থেকে মাগরিবের আগে পর্যন্ত হতে পারে।
গুনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ :–
“যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করল, জুমার নামাজ আদায় করল, তার ঐ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৮৫৭)
দরুদ পাঠের বিশেষ ফজীলত :–
“তোমরা জুমার দিনে আমার উপর বেশি করে দরুদ পাঠ করো। কারণ, এ দিনে তোমাদের দরুদ আমার নিকট পেশ করা হয়।” (সুনান আবু দাউদ, হাদীস: ১৫৩১)
জুমার দিনে করণীয় ৭টি আমল –
১.গোসল ও পরিচ্ছন্নতা
২.উত্তম পোশাক পরিধান
৩.মিসওয়াক ব্যবহার
৪. সূরা কাহফ তিলাওয়াত (সুনান আন-নাসাঈ, হাদীস: ১৩৮৯)
৫.জুমার সালাত যথাসময়ে আদায়
৬. দোয়া ও ইস্তিগফার
৭. দরুদ শরীফ পাঠ
উপসংহার –
পবিত্র শুক্রবার শুধু ছুটির দিন নয়; এটি আত্মশুদ্ধি, গুনাহ মোচন ও আল্লাহর রহমত লাভের দিন। যারা এই দিনের গুরুত্ব বুঝে তা অনুযায়ী আমল করেন, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করেন।
✍️ লেখক পরিচিতি – হা. মুফতি দেলোয়ার হোসাইন মাহদী (ইসলামী লেখক ও সাংবাদিক)
📧 Mail: [islamicreports@gmail.com]