দেহের নানা উপকার করে তিসি বীজ বা ফ্লাক্স সিড। এই বীজে রয়েছে নানা উপাদান। যা দেহকে বিভিন্ন ছোট বড় রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। ফ্লাক্স সিড এবং এর তেল কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়, করোনারি ধমনী রোগের চিকিৎসার জন্য প্রায়শই ব্যবহার হয়। জেনে নেওয়া যাক কী কী উপকারিতা রয়েছে এই বীজের।
উচ্চ রক্তচাপ কমায়: উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা বা উচ্চ রক্তচাপ শরীরের সুস্থ কার্যকলাপের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তিসি বীজ রক্তচাপ মাত্রা কমাতে কার্যকর। জার্নাল মিট সায়েন্স দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রকাশ করা হয়েছে যে নিয়মিত তিসি বীজ খেলে রক্তচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ফ্লাক্স সিডে উপস্থিত অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যাসপার্টিক অ্যাসিড এবং গ্লটেমিক অ্যাসিড, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। যেকোনো ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
কোলেস্টেরল কমায়: বর্তমানে যে ধরনের জীবনধারা বেশিরভাগ মানুষের তা অস্বাস্থ্যকর। তাই কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। শরীরে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। নিয়মিত ফ্লাক্স সিড খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে।
স্বাস্থ্যকর ত্বক, নখ এবং চুল: মাছের তেল খাওয়ার একটি নিরামিষ বিকল্প ফ্লাক্স সিড তেল। এটি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। যা ত্বক নখ ও চুলকে স্বাস্থ্যকর চেহারা দেয়। চুলে ফ্লাক্স সিড তেল প্রয়োগ করলে দারুণ উপকার পাবেন।
ফাইবার সমৃদ্ধ, কার্বোহাইড্রেট কম: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলোও কার্বোহাইড্রেটের সম্ভাব্য উৎস। এই বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে কিন্তু কার্বোহাইড্রেট কম। এক টেবিল চামচ ফ্লাক্স সিডে ৩ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্য দৈনিক প্রস্তাবিত ফাইবারের মানের ১১ শতাংশ।
প্রোটিনে সমৃদ্ধ: ফ্লাক্স সিড উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিনের দুর্দান্ত উৎস। এতে ক্যালোরি কম, যার ফলে আপনার বিপাককে একটি গুরুতর উৎসাহ দেয় এবং ওজন বৃদ্ধি রোধ করে।
হাঁপানি বা অ্যালার্জি কমায়: ফ্লাক্স সিডে ফাইটোয়েস্ট্রোজেন যৌগগুলোর পাশাপাশি ওমেগা-৩ বেশি মাত্রায় থাকে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই দুই যৌগ হাঁপানি রোগীদের অ্যালার্জি কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত দুই টেবিল চামচ তিসি বীজ জলে ভিজিয়ে খেলে উপকার মিলবে।
তবে কোনো কিছুই অত্যধিক পরিমাণে খাওয়া ভালো না। এজন্য প্রয়োজনে পরামর্শ নিতে পারেন চিকিৎসক বা ডায়েটেশিয়ানের।
কীভাবে খাবেন?: মূলত দুইভাবে ফ্লাক্স সিড খাওয়া যেতে পারে। এক, নিয়মিত ২-৩ চামচ করে ফ্লাক্স সিডের গুঁড়া খেতে পারেন। এছাড়া ফ্লাক্স সিড থেকে তৈরি তেলও খেতে পারেন। তবে ফ্লাক্স সিডের পাউডার বেশি দিন তাজা থাকে না। তাই কেনার সময় অল্প পরিমাণে কিনুন। নয়ত নিয়মিত বাড়িতেই ফ্লাক্স সিড গুঁড়া করে খেতে পারেন।