ব্যর্থতার যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসুন।

লেখক:
প্রকাশ: ১১ মাস আগে

লিটন হোসাইন জিহাদ: ব্যর্থতা এবং যন্ত্রণা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে পাওয়া একটি চ্যালেঞ্জিং এবং গভীর ব্যক্তিগত যাত্রা । এ যাত্রায় সহযোগী পাওয়াটা খুব কঠিন। তবে ‍নিজেকে বুঝতে পারলে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস সুদৃঢ় হলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নয়তো আস্তাকুড়ে পরে যেতে হয়। স্রষ্টার উপর ভরসা রেখে হেকমতের সাথে সকল সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য নিজেকে তৈরি রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।

নিজেকে দিয়ে যাচাই করে দেখেছি, ‍সু সময়ে যত পরিমান বন্ধু ও সহযোগীর সন্ধ্যান পাওয়া যায় ব্যর্থতায় তত পরিমান মানুষই গা ঢাকা দেয় অনেক ক্ষেত্রে তারা অপরিচিত মানুষের মতো ও আচরণ করে। যে মেয়েটি ভালোবেসে জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিতে চাই সেও মুখ লোকায় সফলতার পদলেহনে। ব্যস্ততার অজুহাতে ধ্বংস করে দেয় সঞ্চিত ভালোবাসা ও একটি ভরসার হাত।

সকল ব্যর্থতা ও বন্ধু আত্মীয় স্বজন বা প্রিয়জনের অবহেলাকে ভুলে গিয়ে নিজের মধ্যে গড়ে তুলন

১.  আত্ম-সহানুভূতি:আমি বলবো নিজের মধ্যে আত্ম-সহানুভুতি জাগ্রত করুন। ব্যর্থতায় যে ব্যথা অনুভব করছেন একদম নিরম মুর্হুতে নিজের কাছে নিজেই তা স্বীকার করুন। নিজের প্রতি সদয় হোন,প্রতিটি জীবিই বাধা ও সংগ্রামের মুখোমুখি হয়।তা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হলো আত্মজিজ্ঞাসার কাটগড়ায় নিজেকে অপরাধী সাবস্ত না করা।

২.সময় কে ধারণ করুন :প্রতিটি সময়কে নিজেরে মাঝে ধারণ করুন আর ব্যর্থতার পিছনের কারণগুলো প্রতিফলিত করুন। কী ভুল হয়েছে তা শনাক্ত করুন এবং অভিজ্ঞতা থেকে কী শিখতে পেরেছেন তা খাতায় নোট করুন। ব্যর্থতাকে বুদ্ধি ও ব্যক্তিগত বিকাশের সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন কোনো মানুষ যেন আপনার চিন্তা ও চেতনাকে গ্রাস করতে না পারে।  

৩.বাস্তবসম্মত লক্ষ্য সেট করুন: আপনার লক্ষ্যগুলিকে ছোট, পরিচালনাযোগ্য ধাপে ভাগ করুন। নিজের জন্য বাস্তবসম্মত এবং অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করে আপনি ধীরে ধীরে গতি বাড়ান ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন। ছোট ছোট বিজয়কে বড় ভাবে উৎযাপন করুন।

৪.সম-চিন্তার বন্ধু নির্বাচন করুন:আপনার সংগ্রামের দিনগুলো কিংবা নিজের চিন্তা গুলো শেয়ার করার জন্য এমন একজন বন্ধু নির্বাচন করুন যে ইতিবাচক সমর্থন করবে। যে আপনাকে সম মনা মানুষের নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সহযোগীতা করবে। এমন একটি ব্ন্ধু নির্বাচন করুন যে সত্য ও সুন্দরে পথে আপনার সহযাত্রী হবে।

৫.সময়ের সাথে মানিয়ে নিন: নিজেকে সময়ের সাথে মানিয়ে চলতে হবে কারন ব্যর্থতা প্রায়শই আমাদের পথের পুনর্মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় করার একটি সুযোগ উপস্থাপন করে। প্রয়োজন অনুযায়ী আমাদের কৌশল এবং পরিকল্পনা সময়ের সাথে মানিয়ে নিয়েই  উপস্থাপন করতে হবে। কখনও কখনও, নিজেদের ফোকাস অন্যদিকে স্থানান্তরিত করে  বিকল্প পথ অন্বেষনে নতুন সুযোগ পাওয়া যায়। যা ব্যর্থতাকে ঢেকে দিতে পারে।  

৭. ধৈর্য ধরুন:ধৈর্য হল প্রতিকূলতা থেকে ফিরে আসার ক্ষমতা। মননশীলতা, ধ্যান, বা শারীরিক ব্যায়ামের মতো নিজের বিকাশকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ধৈর্য অনুশীলন করুন। একটি ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলুন এবং এমন অভ্যাস গড়ে তুলুন যা আপনার পথকে গন্তব্যে পৌছে দেবে।

৮.হৃদয় খোলা রাখুন : গুজব বা আত্ম-মমতার চক্রে আটকা পড়বেন না।মায়া মানুষের সৃষ্টিশীলতা ধ্বংস করে দেয়।তাই সব কিছুর উর্ধে আপনার হৃদয় যাতে কিছুতেই আটকা না পরে সে দিকে লক্ষ রাখুন। স্বপ্নের প্রতিটি শাখাকে আলাদা আলাদা ভাগে ভাগ করে তাতে মনোযোগ বাড়িয়ে দিন। ছোট ছোট পদক্ষেপগুলো আপনার অগ্রগতিকে তরান্বিত করতে পারে।

৯ আশা বেধে রাখুন   : স্বপ্ন কিংবা আশা ছাড়বেন না। মনে রাখবেন যে ব্যর্থতা এবং কষ্ট কখনো স্থায়ী হয়না। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই নিজেকে নিজেই মনে করিয়ে দিন আপনার   দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য এবং দৃষ্টি কি। সফলতার কল্পিত ছবির উপর আপনার ফোকাস রাখুন । সাময়িক বিপত্তিগুলি দিয়ে জীবন কে সংজ্ঞায়িত করবেন না। ভবিষ্যতের জন্য আশা এবং আশাবাদ বজায় রাখুন।

মনে রাখবেন, ব্যর্থতা এবং কষ্ট কাটিয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি সহজ নয় একটি সময় সাপেক্ষ্য ব্যাপার। ধৈর্য কে রক্তের সাথে মিশিয়ে নেন। ধৈর্যই হলো সকল চ্যালেঞ্জিং সময়কে প্রতিরোধ করার একমাত্র শক্তি।