নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ভুগছে, যার ফলে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন চিকিৎসকের পদ থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে। মাত্র ৭ জন চিকিৎসক কর্মরত থাকলেও এর মধ্যে ২ জন সংযুক্তির আদেশে অন্যত্র কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও নার্স ও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জরুরি বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় ওয়ার্ড বয়দের দিয়েই চিকিৎসা করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি পিয়ন ও ওয়ার্ড বয়েরা ব্যান্ডেজ, সেলাইসহ বিভিন্ন ছোট অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করছেন, যা রোগীদের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি, চর্ম ও যৌন, গাইনী ও অবস, অ্যানেস্থেসিয়া, ডেন্টাল, নাক-কান-গলা, অর্থোপেডিক্স, মেডিসিন, চক্ষু), মেডিকেল অফিসার (অ্যানেস্থেসিয়া), প্যাথলজিস্ট এবং হোমিও চিকিৎসক সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ রোগী বহির্বিভাগে এবং ৮০-৯০ রোগী অন্তর্বিভাগে ভর্তি থাকেন। ৫০ শয্যা থাকার পরও অধিকসংখ্যক রোগী ভর্তি হওয়ায় অনেক রোগীকে মেঝেতে কিংবা বারান্দায় অবস্থান করতে হয়। শুধু নাসিরনগর নয়, পাশের সরাইল, মাধবপুর, লাখাই ও অষ্টগ্রাম থেকেও রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন, যা জনবল সংকটের সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
এছাড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ১টি পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অধীনে ৮টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র থাকলেও সেখানেও নানাবিধ সংকট বিরাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর ভাট বলেন, “জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা কার্যক্রম চালাতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবে এ বিষয়ে সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে।”
নাসিরনগরবাসী দ্রুত এই সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।