স্ট্রোক করা মাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দেরি, শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসা

লেখক: মোঃ শরিফ মিয়া
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

স্টাফ রিপোর্টার, মাকে স্ট্রোক করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতেই দেরি হয়ে যায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসা আহমেদের। ফলে কেন্দ্রে পৌঁছেও পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। তবে সবশেষ খবর অনুযায়ী, আনিসা পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট (ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল) মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)। তিনি ফেসবুকে লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ, এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসার সঙ্গে আমার মাত্র কথা হয়েছে। তার নাম আনিসা আহমেদ। তার অসুস্থ মা এবং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান স্যারের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে।”

ব্যারিস্টার কাজল আরও জানান, বাঙলা কলেজের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্মী শিব্বির আহমেদ উসমানি তাকে আনিসার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “আনিসার বাবা দুই বছর আগে মারা গেছেন। অসুস্থ মায়ের একমাত্র ভরসা সে নিজেই। শিক্ষকরা আনিসাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। আজও তারা শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেছেন।”

তিনি আরও জানান, আনিসার আজকের পরীক্ষাটি বিশেষ বিবেচনায় পরবর্তীতে গ্রহণের ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে ২০০০ সালে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৩২ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে না পারার ঘটনায় আদালতের রায়ে তাদের পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাওয়ার নজির তুলে ধরেছেন তিনি।

ব্যারিস্টার কাজল বলেন, “আমি আইনগত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি এবং আশা করি, আনিসাকে যেন আদালতের দ্বারস্থ হতে না হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড মানবিক বিবেচনায় তার পাশে দাঁড়াবে—এটাই প্রত্যাশা।”

ঘটনার পেছনের কাহিনি:

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, আনিসা আহমেদ ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার সকালে তার মা হঠাৎ স্ট্রোক করেন। বাবাহীন আনিসা একাই মাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে ছুটে আসেন।

কিন্তু দেড় ঘণ্টা দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছানোয় দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি। সঙ্গে থাকা আনিসার খালা জানান, “বাচ্চাটার বাবা নেই। আজ সকালে তার মা স্ট্রোক করেছে। এজন্যই দেরি হয়েছে।”

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আহ্বান জানান। ব্যারিস্টার কাজলের এই পদক্ষেপে নতুন আশার আলো দেখছে আনিসা ও তার পরিবার।