ইরান-ইসরায়েল সাম্প্রতিক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বিজয়কে ‘ইসলাম ও মানবতার বিজয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এক যুগান্তকারী বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১,৩০০-এর বেশি সুন্নি আলেম, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবী।
গত রোববার (২৯ জুন) প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে তাঁরা মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান, আলেম, যুবসমাজ এবং চিন্তাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন ইরানের এ বিজয়ের প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে ঈমান, ঐক্য ও প্রতিরোধের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যায় ইসরায়েল ও পশ্চিমা আগ্রাসী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে।
তাঁরা বলেন, “ইরানের এই বিজয় সত্যের উপর অসত্যের পরাজয়, কুফরের উপর ইসলামের জয়।” এই বিবৃতিকে ইসলামী বিশ্বে একতা ও জাগরণের নতুন ডাক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের দখলদার সরকার—যার জন্ম ব্রিটিশ ষড়যন্ত্র ও মার্কিন সমর্থনের মধ্য দিয়ে—একটি ‘রক্তপিপাসু ক্যান্সার টিউমার’-এর মতো মুসলিম ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা প্রতিদিন ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র নারী-শিশুদের হত্যা করছে।
বিবৃতিদাতারা ৭ অক্টোবরের ‘আল-আকসা তুফান অভিযান’-এর উল্লেখ করে বলেন, এটি ইসরায়েলের সামরিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামোর ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছে। এই অভিযান ছিল একটি প্রতিরোধের মহাকাব্য।
তাঁরা বলেন, মুসলিমদের উচিত পবিত্র কুরআনের এই আহ্বানে সাড়া দেওয়া:
“আর তোমাদের কী হয়েছে? তোমরা কেন আল্লাহর পথে এবং দুর্বল পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য লড়াই করছ না?”
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ও ইয়াহিয়া সিনওয়ার, লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ ও সাইয়্যেদ হাশেম সাফিউদ্দিন-এর শাহাদাতের কথা স্মরণ করে তাঁদের “উম্মাহর সিংহপুরুষ” হিসেবে অভিহিত করা হয়।
তারা সতর্ক করে বলেন, আজ ইরান আক্রান্ত হয়েছে, আগামীকাল আক্রান্ত হতে পারে যেকোনো মুসলিম দেশ। কারণ এই যুদ্ধ কেবল একটি ভূখণ্ডের নয়, পুরো ইসলামী সভ্যতা ও উম্মাহর বিরুদ্ধে।
মুসলিম রাষ্ট্র, রাজনীতিবিদ, আলেম, যুবক ও সচেতন জনগণ যেন পারস্পরিক দ্বন্দ্ব পরিহার করে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশেষভাবে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দূতাবাস, সামরিক ঘাঁটি ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়।
বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়:
“তোমরা দুর্বল হয়ো না, চিন্তিত হয়ো না; যদি তোমরা ঈমানদার হও, তবে তোমরাই শ্রেষ্ঠ (ও বিজয়ী) হবে।”
তাঁরা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন—সত্যের ওপর দৃঢ় থাকলে উম্মাহ বিজয়ী হবেই এবং আবার ফিরে পাবে সম্মান, মর্যাদা ও নেতৃত্ব।